আবদুল আউয়াল জনি, সিটিজি ভয়েস টিভি:

চট্টগ্রাম ফিল্ড-হাসপাতালের বহির্বিভাগ
পুরো বিশ্বকে প্রকৃতির মোছড় দেখাতে ব্যস্ত কভিট-১৯ করোনাভাইরাস। পৃথিবী জুড়ে প্রতিদিন দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। ইউরোপ আমেরিকার মতো পশ্চিমা শক্তির দেশগুলো বুঝতে পারছে প্রকৃতির কাছে সব শক্তিই নস্যি। চায়নার উহান শহর থেকে জিহ্বা উঁচিয়ে পুরো বিশ্ব চেটে-চুটে খাচ্ছে করোনা। ইউরোপের দেশ ইতালী, স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানী সহ সব ক‘টি দেশ এ দূর্যোগ সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছে।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগিদের জন্য ১ লক্ষ মানুষের কাছথেকে জনপ্রতি ১০০ টাকা অনুদান নিয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার কৃতি সন্তান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার ছোট ভাই ডাক্তার বিদ্যুৎ বড়ুয়া।
দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান নাভানা গ্রুপের সহায়তায় সলিমপুরে প্রতিষ্ঠানটির আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেড কারখানার ভেতরে ৬৮০০ বর্গফুটের দুই তলা একটি ভবনে এই অস্থায়ী হাসপাতাল গড়ে তুলছেন তিনি।
গত ২৫ মার্চ নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতাল গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা চান ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া। তার এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসে নাভানা গ্রুপ।
এ যাবত সংগৃহীত অর্থ তিনি ইতোমধ্যে ফিল্ড হাসপাতাল নির্মানের সাথে যুক্ত ইঞ্জিনিয়ারের হাতে তুলে দিয়েছেন। এছাড়াও চিকিৎসা সরঞ্জাম যোগাড় করতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ এসব সরঞ্জাম সহায়তা হিসেবে দিচ্ছেন। ফেসবুকে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল নামে একটি গ্রুপ খোলা হয়েছে। সেখানে এই হাসপাতাল কেনো তারও কিঞ্চিত বর্ণনা রয়েছে। ডাক্তার বিদ্যুৎ বড়ুয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে সবাই মিলে বিকাশ, নগদ ও রকেট এর মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন। ফিল্ড হাসপাতাল করতে টাকা পাঠিয়েছেন একজন রিকশাচালকও। ডাক্তার বিদ্যুৎ বড়ুয়ার ফেসবুক স্টাটাসে বিষয়টি জানা যায়।

রিকশাচালকের টাকা পাঠানো ব্যাক্তির ম্যাসেজ এর স্কিনসট
পাঠকের সুবিধার্থে ডাক্তার বিদ্যুৎ বড়ুয়ার ফেসবুক স্টাটাসটি নিচে দেওয়া হলঃ-
হটাৎ ২০ টাকার একটা এসএমএস আমার ফোনে। ফোন দিলাম আগ্রহ নিয়ে এই ক্ষুদ্র ভালোবাসার কৃতজ্ঞতা জানাতে। জিজ্ঞেস করলাম ২০ টাকার কাহিনী। আমাকে বললো, একজন রিক্সাওয়ালা শুনেছে তার এক যাত্রীর কাছ থেকে ১০০ টাকা দিলেই হাসপাতাল হবে। তার ইচ্ছে হলো সেই মহৎ উদ্যোগে অংশ নিতে। সবকিছু বন্ধ রাস্তায় মানুষ নাই তার এখন দিনের খাবার দিনে জোগাড় করতে কষ্ট হয়। পরে সব ঠিক হলে ১০০ টাকার বেশি দিবে। এখন ২০ টাকা দিতে তার খুব ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু সে জানে না কিভাবে দিবে। তাই অনুরোধ করলো ২০ টাকা দিয়ে হাসপাতলের উদ্যোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে। ফোনের অপর প্রান্তে মানুষটি এমন কথাই বললো। আসলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের এমন ইচ্ছা পুরুন না হয়ে যাবে কই ? এমন মানুষদের হৃদয়ের ভালোবাসাই এই হাসপাতাল নির্মাণের প্রাণশক্তি। তাই তো আমাদের হাসপাতাল চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল।