আবদুল আউয়াল জনি, সিটিজি ভয়েস টিভি:
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত বিশেষ ওপেন মার্কেট সেল (বিশেষ ওএমএস) কর্মসুচির মাধ্যমে খোলাবাজারে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু করেছে সরকার। একজন মানুষ একবারে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল কিনতে পারবেন, সপ্তাহে কেনা যাবে একবার, আর চাল কেনার সময় দেখাতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), তবে কেউ যদি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বা ভিজিডি কর্মসূচির অন্তর্ভূক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি (বিশেষ ওএমএস) কর্মসুচির ভোক্তা হতে পারবেননা। খাদ্য মন্ত্রণালয় এক নির্দেশনায় এ বিষয়গুলো জানিয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় বিশেষ ওএমএসের নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘করোনাভাইরাসের ফলে দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যান চালক, পরিবহন শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার, ভিক্ষুক, ভবঘুর, তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) সম্প্রদায়সহ অন্যান্য সকল কর্মহীন মানুষকে এর আওতায় এনে বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।
গত (৫ এপ্রিল) রোববার থেকে সারা দেশব্যাপী এই কার্যক্রম শুরু হলেও এই বিশেষ ওএমএস এর সুবিধা পৌছেনি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায়। ফলে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে ঘরবন্দি কর্মহীন হয়ে পড়া মধ্যবিত্ত, দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা না খেয়ে থাকার উপক্রম হয়েছে, মধ্যবিত্তের ঘরে ঘরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের ভয়ের চেয়েও বেশি শঙ্কা ও হাহাকার খাদ্য নিয়ে, মানুষের মনে জাগছে জীবন আগে নাকি জীবিকা আগে সেই প্রশ্ন।
লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের দরবেশ হাট রোডের ওএমএস চালের ডিলার মেসার্স বার আউলিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের কাছে বিশেষ ওএমএস এর ১০ টাকার চালের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সিটিজি ভয়েস টিভিকে বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় কার্ডের মাধ্যমে প্রতি পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি করে চাল বিক্রির কার্যক্রম চললেও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে (বিশেষ ওএমএস) কর্মসুচির আওতায় প্রতি পরিবারকে সপ্তাহে ৫ কেজি চাল বিক্রয়ের কোন নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগাড়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আওয়াই মং চাক সিটিজি ভয়েস টিভিকে বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় কার্ডের মাধ্যমে ৬১০২টি পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি করে চাল ডিলারদের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে (বিশেষ ওএমএস) কর্মসুচির আওতায় প্রতি পরিবারকে সপ্তাহে ৫ কেজি চাল বিক্রয়ের কোন নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি, এই বিষয়ে নির্দেশনা পেলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিব।
১০ টাকায় বিশেষ ওএমএস চাল সারা দেশের মানুষ পেলেও লোহাগাড়াবাসী কেন পাচ্ছেনা জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসাইন সিটিজি ভয়েস টিভিকে বলেন, কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত বিশেষ ওপেন মার্কেট সেল (বিশেষ ওএমএস) কর্মসুচির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে খোলাবাজারে ১০ টাকা কেজি দরে প্রতি পরিবারকে সপ্তাহে ৫ কেজি চাল বিক্রির কার্যক্রমের সাথে লোহাগাড়া উপজেলার মানুষ যুক্ত হতে পারেনি বিষয়টি আমার জানা ছিলনা, আমি কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে লোহাগাড়ায় দ্রুত এই কার্যক্রম চালু করার ব্যাবস্থা গ্রহণ করব।