করোনা: আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া

আবদুল আউয়াল জনি, সিটিজি ভয়েস টিভি:

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ‘হটস্পট’ হিসেবে বিবেচনায়, করোনা ভাইরাসের ‘সোশ্যাল ট্রান্সমিশন’ এড়াতে বুধবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন করা হচ্ছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা। উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে এই নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

লকডাউনের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমনে চট্টগ্রামে প্রথম মৃত্যুবরণ করেন সাতকানিয়ার সিরাজুল ইসলাম। তার পর ১৪ই এপ্রিল শনাক্ত হয় তার ছেলেসহ আরো ৫ জন। তাদের মধ্যে একজন ওই বৃদ্ধের ছেলে, একজন স্থানীয় গ্রাম পুলিশের সদস্য, একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক, দুজন ব্যবসায়ী। তাঁরা ওই বৃদ্ধের চিকিৎসা থেকে শুরু করে দাফনের সময়ও কাছাকাছি ছিলেন। সিরাজুল ইসলামের জানাযায় অনেক মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন তারা আক্রান্ত আবার নতুন আক্রান্তদের সংস্পর্শেও অনেকেই এসেছেন। এর আগে পৌরসভার সাম চৌধুরী পাড়া ও ঘাটিয়া পাড়ায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনায় আমরা আজ বুধবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আমরা লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উপজেলা প্রশাসনকে সবাই আশা করি সহযোগিতা করবেন।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর সিটিজি ভয়েস টিভিকে জানান, ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রামে সর্বমোট ৯ শত ৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে মোট করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৭ জন। বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৩০ জন।

তিনি আরো বলেন, সাতকানিয়া উপজেলায় করোনা শনাক্ত হওয়া ৫ জনই পশ্চিম ঢেমশার ইছামতি আলীনগরের বাসিন্দা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যুবরণ করা সিরাজুল ইসলাম (৬৫) নামের ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা মানুষ। যাদের বয়স যথাক্রমে ৩১, ৩০, ২৭, ৩০ ও ২৭ বছর।

ইতিমধ্যে সাতকানিয়ায় কভিট-১৯ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া দুই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা নমুনা সংগ্রহ টিমে থাকা চিকিৎসক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ ওসমানীকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সংস্পর্শ হওয়ায় সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) আটজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) তে পাঠানো হয়েছে। সোমবার তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

উল্লেখ্য চট্টগ্রামের মোট ২৭ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৮ জনই সাতকানিয়ার হওয়ায় সাতকানিয়াকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ‘হটস্পট’ হিসেবে বিবেচনায় নেয় প্রশাসন। তাই করোনা ভাইরাসের ‘সোশ্যাল ট্রান্সমিশন’ এড়াতে সাতকানিয়া লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

মতামত