ই-পেপার | শুক্রবার , ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
×

জনগণের কাংখিত বাংলাদেশ গড়তে যােগ্য ও দেশপ্রেমিক দায়িত্বশীল ভূমিকার বিকল্প নেই

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের মজলিসে শুরার অধিবেশনে জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যাট সেক্রেটারি জেনারেল।

সিটিজি ভয়েস টিভি ডেস্ক:

বাংলাদশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও এসিস্ট্যাট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধ সকল শ্রেনী পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষর মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করেছে। তবে দেশ স্বাধীন হলও স্বাধীনতার স্বাদ মানুষ পায়নি। অতীতের কোন সরকার গনতন্ত্রের চর্চা করেনি। বরং ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে সব ধরনের কুটকৌশল চালিয়েছে। গত ১৫ বছরে স্বৈরাচার সরকার দেশের কোন রাজনৈতিক দলক গনতান্ত্রিকভাব রাজনীতি করতে দেয়নি। গনতান্ত্রিক দাবি আদায়ে রাস্তায় দাঁড়াতেও দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ নির্যাতনের মাত্রা যত বেশি বাড়িয়েছে, জনগণ আদালনের মাত্রা তত তীব্র করেছে। আওয়ামী লীগ মানুষর মনের ভাষা বুঝতে চায়নি এবং প্রকাশ করতেও দেয়নি। পরবর্তীত রাষ্ট্রের কাছ ছাত্ররা মৌলিক অধিকার চাইলে, খুনী-ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশে তার পুলিশ বাহিনী ও সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ গুলি করে হাজার-হাজার ছাত্রকে হত্যা করে। ফলে বৈষম্য বিরাধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সকল শ্রেনী-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। এই আন্দোলন শেখ হাসিনার দাম্ভিকতা জনগণ মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনা শুধু ক্ষমতাই ছাড়তে বাধ্য হয়নি বরং দেশ ছেড়েও পালিয়েছে। এমনকি তার দলের নেতাকর্মীরাও পালিয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম বিআইএ মিলনায়তনে (জেলা অফিস) দক্ষিণ জেলা জামায়াতের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জেলা মজলিসে শুরার সাধারণ অধিবশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছে বলে জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে। বাস্তবে তারা দেশকে ধংসের শেষপ্রান্তে নিয় গেছে। যে কোন সময়ে দেশ দেউলিয়া হয়ে যেতো। আল্লাহর অশেষ দয়ায় দেশের জনগণ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছে। এখন জনগণের কাংখিত বাংলাদেশ গড়তে যোগ্য ও দেশপ্রমিক দায়িত্বশীল ভূমিকার কোন বিকল্প নেই।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান আরো বলেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কাজ কর যাচ্ছে। অতীতে যারাই যখন ক্ষমতায় ছিল তাঁরাই দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। অনেকে দেশের বাইরেও তাদের সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। অতীতে জামায়াত ইসলামীর ২ জন মন্ত্রী ৩টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছে। তারা বিন্দু পরিমাণ দুর্নীতি করেছে বলে আজ পর্যন্ত কেউ অভিযাগও করতে পারেনি। এমনকি যেসব এমপি দায়িত্ব পালন করেছে তাদের বিরুদ্ধেও কেউ দুর্নীতির কোন ধরনের অভিযোগ করতে পারেনি। কারণ জামায়াত ইসলামীর নেতাকর্মীরা আল্লাহকে ভয় করে। রাষ্ট্রীয় সম্পদকে জনগণের সম্পদ মনে করে এবং প্রতিটি মুহুর্ত সেই বিশ্বাস লালন করে। সেজন্য জামায়াতের কর্মীরা জনগণর সম্পদ লুট করেনা এবং করবেও না, ইনশাআল্লাহ।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা আমীর এ্যাডভোকেট আনায়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, শহীদি জনপদ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রতিটি উপজেলায় ইসলামের দুর্গ বানাতে হবে। ন্যায় বিচার, আইনের শাসন এবং মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় জামায়াত ইসলামী যে সংগ্রাম চালিয়ে আসছে তা চূড়ান্তরুপ না নেওয়া পর্যন্ত সকল স্তরের নেতাকর্মীদর কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। জামায়াত ইসলামীর বিরুদ্ধে ইসলাম বিরোধী মহল এখনো অপপ্রচার চালাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী অতীতের ন্যায় দক্ষতা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয় সকল অপপ্রচার রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে, ইনসাফ ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জামায়াত ইসলামী অব্যাহত রেখেছে। বিজয় নিশ্চিত করা পর্যন্ত জামায়াত ইসলামীর আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত রাখতে উপস্থিত মজলিসে শূরা সদস্যদের প্রতি আহান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার ও পতিত সরকারের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এখনো বিভিন্ন এলাকায় ঘাপটি মেরে অবস্থান করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত অভিযান শুরু করে এ সকল অপরাধীদের গ্রেপ্তারপূর্বক বিচারের মুখামুখি করা জরুরি। অন্যথায় ঐ সন্ত্রাসীরা ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিজয়কে নস্যাৎ করতে যে কোন সময় দুস্কর্ম করতে পারে। তাই জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আইন শৃংখলা ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা আরও বৃদ্ধি করার আহবান জানান।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জলা জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য জননেতা এ্যাডভোকেট আনায়ারুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শুরা অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার নায়েব আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ, সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রম মুহাম্মদ জাকারিয়া, ড. ছাবের আহমদ, অধ্যক্ষ মাওলানা জহিরুল ইসলাম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।