রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও রেহাই মিলছেনা হয়রানি থেকে
সিটিজি ভয়েস টিভি ডেস্ক:
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে হামলা ও মামলার শিকার হয়ে দেশে ছেড়ে পালিয়ে কানাডায় আশ্রয় নেওয়া আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টির) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়নুল আবেদীন রিয়াজ এর পিতা হাফিজুর রহমানের মালিকানাধীন ১ কানি (৪০ শতক) জমি অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১ জানুয়ারি ২০২৫) রাতে সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান এর সহযোগিতায় একদল দূর্বৃত্তরা হাফিজুর রহমানের মালিকানাধীন ১ কানি (৪০ শতক) জমি অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখল করে কাঁটাতারের বেড়া লাগিয়ে দিয়েছে। জায়গাটিতে পেঁপে ও কলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির বাগান ছিল।
এবিষয়ে এবি পার্টি নেতা জয়নুল আবেদীন রিয়াজ এর স্ত্রী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোন জয়নুল আবেদীন রিয়াজ হোয়াটসঅ্যাপে প্রতিবেদককে জানান, বিগত সরকার আমাকে গুম এবং হত্যা করার উদ্দেশ্যে কি কি করছিল তা দেশের জনগণ অবগত আছে, তাদের নির্যাতন-নিপীড়ন, হামলা ও মামলার শিকার হয়ে আমি দেশ ছেড়ে পালিয়ে কানাডায় আশ্রয় নিয়েছি, এবং বর্তমানে সেখানেই আছি। তাই আমার বাবাকে তারা টার্গেট করেছে, আমার এলাকার আরেক বড় সন্ত্রাসী মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যানের সহায়তার আমাদের সম্পত্তি তাঁরা জোর করে দখল করেছে, সব কিছুর বিচার একদিন হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা কামাল খান বলেন, জমি দখল সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। যিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁর স্বামী এবি পার্টির নেতা জয়নুল আবেদীন রিয়াজ এর নামে ইতিমধ্যে আমাদের কাছে ৬টি মামলার ওয়ারেন্ট আছে। এছাড়াও তাঁর পিতা হাফিজুর রহমানও ইতিপূর্বে গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আছে। তারপরও আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি এ বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে চলে আসা পারিবারিক ঝগড়াকে রাজনৈতিক রুপ দিয়ে গত ২০২৪ সালের ৫ই নভেম্বর আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টির) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়নুল আবেদীন রিয়াজ এর বাড়িতে হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী দূর্বৃত্তরা। এসময় হামলাকারীরা জয়নুল আবেদীন রিয়াজ ও তাঁর ছোটভাই মাসউদ আযহারকে খুজতে থাকে তাঁদের খুঁজে না পেয়ে তাঁদের পিতা হাফিজুর রহমানকে লোহার রড, হকিস্টিক ও লাঠিসোটা নিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে দূর্বৃত্তরা জয়নুল আবেদীন রিয়াজ এর বাড়ি লক্ষ্য করে ৮/১০টি ককটেল এর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৪০/৫০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে পুরো পরিবারের সবাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় জয়নুল আবেদীন রিয়াজ এর পিতা হাফিজুর রহমানকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ৫দিন চিকিৎসার পর হাফিজুর রহমান কিছুটা সুস্থ হয়ে ১১ই নভেম্বর সোমবার বিকেলে মামলা দায়ের করার জন্য সাতকানিয়া থানায় গেলে মামলা না নিয়ে উল্টো তাঁকেই গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় সাতকানিয়া থানা পুলিশ। হাফিজুর রহমানকে আদালতে হাজির করে কয়েক দফা জামিন চাওয়া হলেও জামিন নামঞ্জুর করেছেন বিচারক। ফলে কোন ধরনের অপরাধ না করেও জেলে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে বৃদ্ধ হাফিজুর রহমানকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও চট্টগ্রাম-১৫ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের আওয়ামীলীগ দলীয় সাবেক দুই সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী ও আবদুল মোতালেব এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও সন্ত্রাসীদের গডফাদার নাজিম উদ্দীন এর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে হামলা ও মামলার শিকার হয়ে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টির) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়নুল আবেদীন রিয়াজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে কানাডায় আশ্রয় নেওয়ার পরও হয়রানি থেকে রেহাই মিলেনি। পূর্বে ৩টি মামলার আসামী করার পাশাপাশি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নাশকতায় জড়িত দেখিয়ে নাশকতা ও ভাংচুরসহ গত ২৫ ও ২৬শে জুলাই ২০২৪ইং সাতকানিয়া থানায় দায়েরকৃত ৩টি মামলার আসামি হিসেবে তাঁর নাম যুক্ত করে পুলিশ। বর্তমানে উপরোক্ত ৬টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী হিসেবে তাঁকে খুঁজছে পুলিশ। এরসাথে যুক্ত হল তাঁর পিতা হাফিজুর রহমানের জমি জোরপূর্বক অবৈধ দখল।